বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৭ অপরাহ্ন
তরফ আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইদলিবে সিরিয়ার সেনারা বিমান হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে তুরস্কের কমপক্ষে ৩৩ সেনাকে। এতে আহত হয়েছে আরো কয়েক ডজন। তাদেরকে তুরস্কের অভ্যন্তরে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তুর্কি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
তুরস্কের হাতায় প্রদেশের গভর্নর রাহমি দোগান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত ৩৩ তুর্কি সেনা নিহত হয়েছে। আহতদের মধ্যেও অনেকের অবস্থা গুরুতর। তারা তুর্কি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। প্রাথমিকভাবে ৯ সেনা নিহতের খবর প্রকাশ করেছিলো তুরস্ক।
তবে কয়েক ঘন্টার ব্যাবধানেই এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩ জনে। ঘটনার পর তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে জরুরি বৈঠক ডাকেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েফ এরদোগান। বৈঠক শেষ করেই তাতক্ষনিকভাবে সিরিয়া সীমান্তে যান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হুলুসি আকার। সেখানে তিনি প্রকৃত অবস্থা পর্যবেক্ষন করে পরবর্তি কর্তব্য নির্ধারণ করবেন বলে জানানো হয়েছে।
সিরিয়ার অভ্যন্তরে যুদ্ধের জন্য তুর্কি সেনাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আকার। বাশার আল-আসাদের বাহিনীর ওপর আকাশ ও ভ’মিতে যুদ্ধ পরিচালনা করছে তুরস্ক। এটি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী হাতায় প্রদেশ থেকে। শুক্রবারের হামলার পর সাহায্য চেয়ে ন্যাটোর প্রধান জেন্স স্টলটেনবার্গকে ফোন করেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসগলু। তবে তাদের মধ্যে কি কথা হয়েছে তা জানা যায়নি।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তুরস্ক ও রাশিয়া ইদলিবে একটি যুদ্ধমুক্ত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একমত হয়। অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করছে ইসলামপন্থী জঙ্গি ও বিদ্রোহীরা। তবে সম্প্রতি ইদলিব পুনরায় দখলে নিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে রাশিয়া ও সিরিয়ার যৌথ বাহিনী। দ্রুতই দখল করে নেয় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন শহর ও গ্রাম। বিদ্রোহী ও জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো কোনঠাসা হয়ে পড়ে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান। হুমকি দেন, রাশিয়া ও সিরিয়া যদি ইদলিবে হামলা চালানো বন্ধ না করে তাহলে তুরস্কও সামরিক অভিযান চালাবে। তবে এরপরেও বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে হামলা অব্যাহত রাখে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী। ফলে সিরিয়ার অভ্যন্তরে সেনা অভিযান পরিচালনা করে তুরস্ক। কিন্তু এরপরই সিরিয়ার সেনাদের টার্গেটে পরিণত হয় তুর্কি সেনারা। শুক্রবারের হামলার পূর্বেও তুর্কি সেনাদের লক্ষ্য করে কয়েক দফা হামলা চালিয়েছে সিরিয়া। এতে নিহত হয় কয়েক ডজন তুর্কি সেনা। তবে এবারের হামলাতেই একইসঙ্গে সর্বোচ্চ সংখ্যক তুর্কি সেনা নিহত হলো। শুধু ফেব্রুয়ারি মাসেই অন্তত ৫৩ তুর্কি সেনাকে হত্যা করেছে সিরিয়ার সেনাবাহিনী।
শুক্রবারের হামলার পর রাশিয়া অবশ্য দাবি করেছে, আঙ্কারা তাদেরকে নিশ্চিত করে জানায়নি যে বিদ্রোহী ও তুর্কির সেনারা একইসঙ্গে যুদ্ধ করছিলো। তুরস্কের সেনারা সেখান থেকে রাশিয়ার বিমান ধ্বংসের জন্য মিসাইল হামলা চালায়। এরপরই জবাব দিতে বাধ্য হয় তারা। কিন্তু এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় তুরস্ক। দেশটি সিরিয়ার সেনাদের সকল ঘাঁটিতে হামলার হুশিয়ারি দিয়েছে। একইসঙ্গে, বাশার আল-আসাদের বিষয়ে চুপ থাকার জন্য বিশ্বের দেশগুলোকেও দায়ি করেছে আঙ্কারা।